









বাস্তব জীবনে দেরীতে হলেও একদিন ঠিক মিলে ন্যায় বিচার। ঠিক সেরকমই এক ঘটনা ঘটে পশ্চিমবঙ্গের এক শিক্ষিকার সাথে। এক্কেবারে ৩৬ বছর ধরে চালিয়ে যাওয়া যুদ্ধে বিজয়ীর বেশে বাড়ি ফিরছেন তিনি। শিক্ষিকার দীর্ঘ ২৫ বছরের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। এই সুদীর্ঘ যুদ্ধের পর অবশেষে বৃদ্ধার মুখেই ফুটেছে জয়ের হাসি।










অভিযোগকারিণী শ্যামলী ঘোষ ১৯৭৬ সালে হাওড়ার শ্যামপুর হাইস্কুলে শিক্ষিকার পদে যোগ দেন। কিন্তু চাকরি মিললেও কাজ করতে পারেন মাত্র চার বছর। এরপরই শুরু হয় বিপত্তি। তৎকালীন স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুল থেকে বের করে দেন তাকে।










কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও সুরাহা না মেলায় ১৯৮৬ সালে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তিনি। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও আসেনি কাঙ্ক্ষিত সেই রায়। এমনকি ২০০৫ সালে অবসরগ্রহণের দিন পর্যন্ত তাকে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।










এরপর ২০১৩ সালে তৎকালীন বিচারপতি অশোক কুমার দাস নির্দেশ দেন শিক্ষিকার সমস্ত টাকা মিটিয়ে দেওয়ার। সেনির্দেশের পর মেলে শিক্ষিকার সমস্ত পেনশন। এভাবেই কেটে যায় আরো এক দশক। অর্থাভাবের কারণে আইনজীবী অবধি নিযুক্ত করতে পারেননি শিক্ষিকা। এজন্য ৭৬ বছর বয়সে নিজের জন্য নিজেই নামেন সওয়াল জবাবে। এসময়ই এগিয়ে আসেন প্রাক্তন আইনজীবি রবিলাল মৈত্র। শিক্ষিকার হয়ে তিনিই কোর্টে সওয়াল জবাব করেন।










সংবাদসুত্রে খবর এই ঘটনায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তারপরই মেলে সুরাহা। তাকে ২৫ বছরের বেতন দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া ২০১৩ সাল থেকে ১০% সুদে তাকে তার সমস্ত টাকা দিতে।










বিচারপতি এদিন স্কুল এডুকেশন কমিশনকে নির্দেশ দেন যাতে আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে ওই শিক্ষিকার সমস্ত পাওনাগন্ডা মিটিয়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিনের এই যুদ্ধের পর এদিন জয়লাভ করেও, মামলার নিষ্পত্তি করেননি তিনি। তার বক্তব্য সমস্ত টাকা পাওয়ার পরই তিনি মামলা তুলে নেবেন। তবে এদিন কোর্টের রায়ের পর তার চোখে জল চলে আসে। স্বভাবতই স্বতস্ফূর্ত দেখা যায় তাকে।



















